বৃৃৃৃদ্ধি পেতে পারে ছুটি



মহামারী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই ছুটি আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টকয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকার মনে করছে, করোনা নিয়ন্ত্রণে ছুটি ভালো ফল দিয়েছে। গত দুইদিন নতুন করে কোনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি। ৪ তারিখ আসতে আরও কয়েকদিন রয়েছে। এরমধ্যে পরিস্থিতি বোঝা যাবে।

তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যাই হোক, ছুটি বাড়ানো ছাড়া আপাতত অন্য কোনো বিকল্পও নেই। কারণ আগামী ছুটির দিনগুলোতেও যদি নতুন করে যদি কেউ আর আক্রান্ত নাও হয়, তবেও ঝুঁকিমুক্ত থাকতে ছুটি বাড়ানো উচিত। আর আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে তো আবশ্যিকভাবেই ছুটি বর্ধিত করতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ছুটি বাড়বে কি বাড়বে না, সেই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীই নেবেন। আর ছুটি বাড়লেও, তা কোন তারিখ পর্যন্ত নেয়া হবে, তা সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে প্রধানমন্ত্রীই ঠিক করবেন।

ছুটি বাড়ানো হলে তা ১১ এপ্রিল কিংবা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম জাগো প্রহরীকে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের আবেদন থাকবে ছুটি আরও কিছু দিন বাড়ানো হোক। এতে আমরা আরও নিশ্চিত হতে পারব, আরও ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারব।’

এ বিষয়ে কথা বলতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ার ইসলামকে ফোন দেয়া হলেও তিনি ধরেননি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জাগো প্রহরীকে বলেন, ‘ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি দেখে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।’

দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি এবং তা মোকাবেলায় গত ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাথে আলোচনা করেন। এর আগে তিনি সেনাবাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ১০ দিন ছুটিসহ দশটি সিদ্ধান্ত দেন।

ঐদিনই বিকেলে সচিবালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর এসব সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, আগামী ২৬ মার্চের সরকারি ছুটি এবং ২৭ থেকে ২৮ মার্চের সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ৩ ও ৪ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন এই বন্ধের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবার জন্য এই ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না।

ছুটি বাড়বে কিনা- জানতে চাইলে রোববার (২৯ মার্চ) ভিডিও প্রেস কনফারেন্সে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করবো আপনারাও পর্যবেক্ষণ করবেন দেশবাসী করবেন, প্রধানমন্ত্রী পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি ১০ দিনে দেশের ও পৃথিবীর পরিস্থিতি মোটামুটি একটা সহনশীল অবস্থায় চলে আসে তখন এক ধরনের চিন্তা হবে। যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেব যে, পরিস্থিতি দেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করার। প্রধানমন্ত্রী যদি পরিস্থিতি দেখে ছুটি বাড়াতে চান তো বাড়াবেন, পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন তিনি।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) রোববারের (২৯ মার্চ) তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আর কেউ আক্রান্ত হয়নি। শনিবারের মতো রোববারও দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্তের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা আগে যা ছিল তা-ই আছে। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পরীক্ষায় নতুন করে কারও শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সেইসঙ্গে কোভিড-১৯ সংক্রমিত মোট ১৫ জন সুস্থ আছেন বলে জানানো হয়েছে। আর মৃতের সংখ্যা ৫ জনই আছে।
আরও নতুন পোষ্ট পরবর্তী পোষ্ট

Related Posts

Facebook

Get the latest article updates from this site via email for free!